মোবাইল অ্যাপ বনাম ওয়েব অ্যাপ – কোনটা বেছে নেবেন?

মোবাইল অ্যাপ বনাম ওয়েব অ্যাপ কোনটা আপনার জন্য জানতে চাইলে অবশ্যই এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন। আজকের পোস্ট পড়ে আপনি মোবাইল অ্যাপ এবং ওয়েব অ্যাপ সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা নিতে পারবেন।

মোবাইল-অ্যাপ-বনাম-ওয়েব-অ্যাপ-কোনটা-বেছে-নেবেন

মোবাইল অ্যাপ এবং ওয়েব অ্যাপের মধ্যে কিছু পার্থক্য এবং সুবিধা-অসুবিধা রয়েছে, যা আজকের এই পোস্টে আমি আলোচনা করার চেষ্টা করবো। আপনি এই বিষয়গুলো সম্পর্কে এবং আপনার জন্য কোনটি ভালো হবে সেটি জানতে চান তহালে এই পোস্টটি অবশ্যই পড়ুবেন।

পোস্ট সূচিপত্র | মোবাইল অ্যাপ বনাম ওয়েব অ্যাপ – কোনটা বেছে নেবেন?

প্লাটফর্ম নির্ভরতার দিক থেকে মোবাইল অ্যাপ বনাম ওয়েব অ্যাপ

মোবাইল অ্যাপ এবং ওয়েব অ্যাপের মধ্যে অনেক কয়টি পার্থক্য রয়েছে তার মধ্যে একটি হলো প্লাটফর্ম নির্ভরতা অর্থাৎ কোন ধরণের অ্যাপ কোন প্লাটফর্মে ব্যবহার করা যায় সেটি। মোবাইল অ্যাপ এবং ওয়েব অ্যাপের মধ্যে কোনটা কোন প্লাটফর্মে চলে সেই সম্পর্কে আপনার জানা প্রয়োজন, তাহলে আপনি বুঝতে পারবেন দুটির মধ্যে কোনটি আপনার জন্য সহজ এবং ভালো হবে।

মোবাইল অ্যাপ মূলত এন্ড্রোয়েড বা IOS এ ব্যবহার করা যায়। পিসিতেও ব্যবহার করা যায় কিন্তু সেখানে সাপোর্ট খাওয়ানোর জন্য প্রয়োজন Bluestack, Noxplayer ইত্যাদির মতো এমুলেটর। কিন্তু সবার পিসিতে বা Low End Pc তে এই এমুলেটরগুলো সাপোর্ট খায়না তাই এটা সবার পিসিতে চলবেনা।

আর ওয়েব অ্যাপ এন্ড্রেয়েড, IOS, পিসি, লিনাক্স, ম্যাকসহ যত ধরণের ডিভাইস আছে (যেখানে ব্রাউজ করার মতো ব্রাউজার সাপোর্ট হয়) সেরকম সব জায়গায় ওয়েব অ্যাপ ব্যবহার করা সম্ভব। তাই এর মাধ্যমে আপনার ওয়েব অ্যাপে ভিউজও বেশি আসবে।

আরও পড়ুন: ফ্রিতে ৫টি অসাধারণ ওয়েবসাইটে ইনকাম করতে ক্লিক করুন

ইনস্টলেশনের প্রয়োজনীয়তার দিক থেকে মোবাইল অ্যাপ বনাম ওয়েব অ্যাপ

মোবাইল অ্যাপ এবং ওয়েব অ্যাপ এর মধ্যে ইনস্টলেশনের দিক থেকেও কিছু পার্থক্য রয়েছে। যা আপনার জানা প্রয়োজন আর এই বিষয়টি আপনাকে সাহায্য করবে আপনার নির্বাচনে যে, আপনি কোন ধরণের অ্যাপ বানাবেন এবং ভিউজ বা ব্যবহারকারী বেশি নিবেন।

মোবাইল অ্যাপ মূলত সেই অ্যাপগুলোকে বলা হচ্ছে যা আমরা প্লে-স্টোর বা অ্যাপ স্টোর থেকে ডাউনলোড করে ব্যবহার করে থাকি যেমন: বিকাশ, রকেট, নগদসহ এমন আরও অনেক এপস বা গেমস। এই সফটওয়্যারগুলোকে প্রথমে কোনো অ্যাপ স্টোর বা প্লে-স্টোর থেকে ডাউনলোড করতে হয়, তারপরে সেখানে বিভিন্ন অনুমতি প্রদান করে সেই অ্যাপসে কাজ সম্পাদন করতে হয়, যা তুলনামূলক একটু ঝামেলা মতো।

আবার, ওয়েব অ্যাপে এগুলো ঝামেলাই থাকে না। আপনি যদি শুধুমাত্র যেকোনো ব্রাউজারে গিয়ে সার্চ করেন যেটা খুজছেন সেটা তাহলে আপনি সেই বিষয়টি সেই ব্রাউজারেই পেয়ে যাবেন। আর এরজন্য আপনাকে কিছু ডাউনলোডও করতে হবে না এবং মোবাইল অ্যাপে যত পারমিশন দিতে হয় তত পারমিশানও দিতে হবে না, খুব আরামেই আপনি বা আপনার ব্যবহারকারী চালাতে পারবেন।

ইন্টারনেট সংযোগের দিক থেকে মোবাইল অ্যাপ বনাম ওয়েব অ্যাপ

এখন আসি মোবাইল অ্যাপ এবং ওয়েবস অ্যাপ এই দুইটির মধ্যে কোনটিতে ইন্টারনেট সংযোগ লাগে আর কোনটিতে লাগে না বা লাগলেও কম লাগে। আসলে ইন্টারনেট সংযোগ দুই ধরণের অ্যাপেই লাগেই কোনোটাতে কম লাগে আবার কোনোটাতে বেশি লাগে।

প্রথমে বলা যাক মোবাইল অ্যাপ এর কথা। এই ধরণের অ্যাপের মধ্যে কিছু অ্যাপ শুধুমাত্র ডাউনলোড করতেই ইন্টারনেট লাগে কিন্তু ব্যবহার করতে লাগে না। আবার কিছু অ্যাপ ডাউনলোড করা থেকে শুরু করে ব্যবহার করা পর্যন্ত প্রত্যেকটি কাজেই ইন্টারনেট ব্যবহার করা হয়।

আবার, ওয়েব অ্যাপের ক্ষেত্রে যেহেতু ওয়েব অ্যাপগুলো সার্ভারের আন্ডারে থাকে, তাই সেখানকার কোনো ডাটা আদান-প্রদান করতে চাইলে সেখানেই সর্বদাই ইন্টারনেটের প্রয়োজন হয়। কিন্তু আপনি চাইলে PWA এর মাধ্যমে পেইজটি ডাউনলোড করে শুধুমাত্র সেই পেইজটি অফলাইনে পড়তে পারবেন।

পারফরমেন্স ও গতির দিক থেকে মোবাইল অ্যাপ বনাম ওয়েব অ্যাপ

এখন আসি মোবাইল অ্যাপ বনাম ওয়েব অ্যাপ কোনটার পারমেন্স এবং গতি ভালো। বর্তমানে মোবাইল অ্যাপ হোক কিংবা ওয়েব অ্যাপ ভালো পারফরমেন্স এবং গতি দ্রুততম সকলেই চাই, কেননা এর মাধ্যমে অ্যাপগুলো স্মুথলি ও ফ্রেন্ডলি চালানো যায়।

মোবাইল অ্যাপ যখন আপনি ডাউনলোড করেন কোনো স্টোর থেকে তারপরে যখন সেই অ্যাপসটি ব্যবহার করতে শুরু তখন অ্যাপসটি আপনার মোবাইলের মোবাইলের মেমোরি, প্রসেসর ও স্টোরেজের উপর নির্ভর করে। অর্থাৎ বলা যায়, যদি সেগুলো ভালো মানের না হয় এবং সেগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণ জায়গা না থাকে তাহলে আপনার অ্যাপসটি প্রচুর হ্যাং করবে ও স্মুথলি চলবে না।

পারফরমেন্স-ও-গতির-দিক-থেকে-মোবাইল-অ্যাপ-বনাম-ওয়েব-অ্যাপ

আবার অপরদিকে, ওয়েব অ্যাপ ব্যবহার করার জন্য আপনার মোবাইলের প্রসেসর, স্টোরেজ ও মেমোরি ঐভাবে ব্যবহার হয়না যেভাবে মোবাইল অ্যাপের জন্য ব্যবহার হয়। কেননা এই ওয়েব অ্যাপগুলো সবচেয়ে বেশি আপনার ইন্টারনেট কানেকশনের উপর নির্ভর করে। আপনি ইন্টারনেট যত বেশি ভালো হবে আপনি ততই স্মুথলি ওয়েব অ্যাপ চালাতে পারবেন আর কানেকশন ভালো না হলে ভালো করে চালাতে পারবেন না।

আপডেট ও রক্ষণাবেক্ষণের দিক থেকে মোবাইল অ্যাপ বনাম ওয়েব অ্যাপ

এখন আসুন কথা বলি মোবাইল অ্যাপ এবং ওয়েব অ্যাপ এর মধ্যে কোনটাতে আপডেট ও রক্ষণাবেক্ষণ করা ও ইউজারদের জন্য ব্যবহার করা সহজ হয়। মোবাইল অ্যাপ বনাম ওয়েব অ্যাপের মধ্যে কোনটি আপনার জন্য ভালো হবে আপডেট ও রক্ষণাবেক্ষণের দিক থেকে তা জেনে নিন। এর আগেই বলেছি মোবাইল অ্যাপ মূলত দুইটি প্লাটফর্মের জন্য Andoid ও IOS। আপনি চাইলে দুইটাতেই মোবাইল অ্যাপ পাবলিস করতে পারেন কিন্তু সেটা আলাদা আলাদা ভাবে করতে হয়।

তার মানে আপনার এমন মোবাইল অ্যাপ যা উভয়ে সাপোর্ট খায় সেই অ্যাপ যদি আপডেট করতে চান তাহলে আপনাকে দুই প্লাটফর্মেই আলাদা আলাদা ভাবে আপডেট করতে হবে এবং তা অন্য কাউকে দিয়ে চেক করাতে হবে যে, তা ঠিকঠাক চলছে কিনা। অপরদিকে আপনার যদি একটা ওয়েব অ্যাপ থাকে এবং আপনি যদি তা আপডেট করতে চান তাহলে তা একভাবে আপডেট করলেই হবে।

আর তখন সেই অ্যাপটি অটোমেটিকভাবে বাকি সকল প্লাটফর্মে আপডেট হয়ে যাবে। আর কোনো ইউজারকে কিছুই করতে হবে না নতুন ফিচার ব্যবহার করার জন্য, সাধারণভাবে ওয়েব অ্যাপে প্রবেশ করলেই হবে। কিন্তু মোবাইল অ্যাপের ক্ষেত্রে ইউজারকে কোনো অ্যাপস্টোর থেকে প্রথমে অ্যাপটি আপডেট করে নিতে হয় নতুন ফিচার ব্যবহার করার জন্য।

ডেভেলপমেন্ট খরচের দিক থেকে মোবাইল অ্যাপ বনাম ওয়েব অ্যাপ

এখন আসি তুলনামূলক মেইন একটি বিষয়ের দিকে যেখানে জানা যাবে মোবাইল অ্যাপ এবং ওয়েব অ্যাপ এর মধ্যে কার ডেভেলপমেন্ট খরচ বেশি এবং কার কম। মোবইল অ্যাপ ২টি প্লাটফর্মে তৈরি করা যায় (যা একটু আগেই আলোচনা করা হয়েছে)।

আপনি যদি দুইটিতেই আপনার মোবাইল অ্যাপ লঞ্চ করাতে চান তাহলে আপনাকে দুইটিতে আলাদা আলাদাভাবে লঞ্চ করতে হবে। কেননা, এক্ষেত্রে দুইটির কোডবেস ভিন্ন, UI/UX ডিজাইন ভিন্ন, উভয়ে বাগ ফিক্সিং করাসহ ইত্যাদি কাজ করতে হয় যার মধ্যে কিছু ভিন্ন এবং কিছু কাজ একই। তাই এখানে ডেভেলপমেন্ট খরচ অনেক বেশি হয় আমার ধারণা প্রায় ১ লক্ষ কিংবা তার উপরে খরচ পড়বে।

অপরদিকে ওয়েব অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট এর জন্য খরচ তুলনামূলক কম। কেননা ওয়েব অ্যাপ একটি কমন প্লাটফর্মে তৈরি করা যায়, যার ফলে একজন ডেভেলপারের খরচ দিয়েই হয়ে যায়। এখানে শুধুমাত্র ডোমেন ও হোস্টিং এর খরচ ছাড়া আর কোনো খরচ লাগে না। আপনি ভালো মানের ওয়েব অ্যাপ শুরু করতে পারেন শুধুমাত্র ২০-৫০ হাজার টাকার মধ্যে।

ইউজার এক্সপেরিয়েন্সের দিক থেকে মোবাইল অ্যাপ বনাম ওয়েব অ্যাপ

মোবাইল অ্যাপ এবং ওয়েব অ্যাপের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় বলা যায় ইউজার এক্সপেরিয়েন্স। কেননা এখানে জানা যাবে, আপনার বানানো অ্যাপটি আপনার ইউজার ব্যবহার করতে পারছে কিনা বা ব্যবহার করে শান্তি পাচ্ছে কিনা বা ব্যবহার করার সময় কোনো সমস্যা হচ্ছে কিনা ইত্যাদি সম্পর্কে।

মোবাইল অ্যাপ এর ক্ষেত্রে ইউজার এক্সপেরিয়েন্স সবচেয়ে ভালো হয় সাধারণত। কেননা, এই মোবাইল অ্যাপটি চলে মোবাইলের মেমোরি, প্রসেসর এবং স্টোরেজের উপর ভিত্তি করে। এগুলো যত বেশি ভালো হয় এবং জায়গা ফাকা থাকে তত বেশি ভালো চলে অ্যাপটি। তাছাড়া এগুলো মোবাইলের জন্য ফ্রেন্ডলিভাবে বানানো হয়, যার ফলে সকলেই এই অ্যাপগুলো চালিয়ে শান্তি বোধ করে এবং বাউন্স রেটও কম হয়।

অপরদিকে ওয়েব অ্যাপ নির্ভর করে ব্রাউজারের ক্ষমতা এবং ইন্টারনেট সংযোগের উপরে। ব্রাউজারের ক্ষমতা যত বেশি হবে এবং ইন্টারনেট সংযোগ যত বেশি ভালো তত ভালো এক্সপেরিয়েন্স হবে ওয়েব অ্যাপের। তাছাড়া ওয়েব অ্যাপের মধ্যে সাধারণত তথ্য সেভ থাকেনা কিন্তু বর্তমানে Remeber Me অপশানের জন্য সকল তথ্য সেভ রাখা যায়।

ডাউনলোড ও স্টোরেজের দিক থেকে মোবাইল অ্যাপ বনাম ওয়েব অ্যাপ

মোবাইল অ্যাপ এবং ওয়েব অ্যাপ উভয়ের ক্ষেত্রেই ডাউনলোড এবং স্টোরেজের বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলা যায়। কেননা, এর কারণেই মানুষজন কোন অ্যাপটি চালাবে তা নির্বাচন করে। তাই জন্য এই বিষয়ের উপর এবং অন্যান্য বিষয়ের উপর খেয়াল রেখে আপনি মোবাইল অ্যাপ বা ওয়েব অ্যাপ বেছে নেন।

যেহেতু মোবাইল অ্যাপগুলো মোবাইলের ইন্টারনাল স্টোরেজ, প্রসেসর এবং মেমোরির উপর নির্ভরশীল অর্থাৎ এগুলো ভালো হলে এবং জায়গা ফাকা থাকলে মোবাইল অ্যাপ ভালো বলা যায়। মোবাইল অ্যাপ চালানোর জন্য প্রথমে ডাউনলোড করতে হয় কিন্তু যাদের মোবাইলে জায়গা থাকে না তারা মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করতে পারে না আর করলেও তা প্রচুর পরিমাণ হ্যাঁং করে।

অপরদিকে ওয়েব অ্যাপ ব্রাউজার এবং ইন্টারনেটের উপর নির্ভর করে এবং এই অ্যাপগুলো মোবাইলের স্টোরেজও ঐভাবে ব্যবহার করে না, করলেও সামান্য পরিমাণে করে এবং তা হিস্টোরি বা ক্যাচ থেকে ক্লিয়ার করা যায়। আর এই ওয়েব অ্যাপে ডাউনলোডেরও কোনো ঝামেলা থাকে না, শুধুমাত্র ব্রাউজারে গিয়ে সার্চ করলেই ওয়েব অ্যাপ ব্যবহার করা যায়।

লঞ্চ ও মার্কেটিং এর দিক থেকে মোবাইল অ্যাপ বনাম ওয়েব অ্যাপ

মোবাইল অ্যাপ ও ওয়েব অ্যাপের লঞ্চ ও মার্কেটিং একটু ভিন্ন। কোনটা সহজ এবং কোনটা কঠিন, কোনটাতে খরচ বেশি এবং কোনটাতে ইউজার বেশি পাপওয়া যায় সেগুলোই আমরা জানবো এখন। মোবাইল অ্যাপ লঞ্চ করা একটু কঠিন হতে পারে এবং খরচও বেশি হতে পারে।

মোবাইল অ্যাপ লঞ্চ করা যায় দুটি প্লাটফর্মে কিন্তু দুটিতেই ভিন্ন ভিন্ন প্রক্রিয়ায় লঞ্চ করতে হয়। দুটিতেই লঞ্চ করার জন্য প্রথমে অ্যাপ স্টোরে এবং প্লেস্টোরে লঞ্চ করতে হবে তারপরে তা রিভিউ এবং টেস্টিং এর মাধ্যমে কনফার্ম করতে হবে যে সেই অ্যাপটি ঠিকাছে কিনা। আর স্টোরে পাবলিশ করার পর পরই আপনি ভালো পরিমাণে ইউজার বা ভিউয়ারস পেয়ে যাবেন অর্থাৎ এখানে মার্কেটিং স্ট্রাটাজি আপনি প্রথম থেকেই ভালো পাচ্ছেন।

লঞ্চ-ও-মার্কেটিং-এর-দিক-থেকে-মোবাইল-অ্যাপ-বনাম-ওয়েব-অ্যাপ

অপরদিকে ওয়েব অ্যাপ লঞ্চ করার জন্য আপনার একটি ডোমেন ও হোস্টিং থাকলেই এবং আপনি তার মাধ্যমেই একটি ওয়েব অ্যাপ বানিয়ে ফেলতে পারেন এবং সেটি পাবলিশ করতে পারেন খুব সহজেই। কিন্তু এখানে আপনি মোবাইল অ্যাপের মতো সহজেই মার্কেটিং পাবেন না বরং আপনাকে একটু কষ্ট করে মার্কেটিং করতে হবে বিভিন্নভাবে তাহলে আপনি আপনার ওয়েব অ্যাপে ট্রাফিক এবং ইউজার নিয়ে আসতে পারবেন।

আরও পড়ুন: যেকোনো কিছুর মার্কেটিং করুন অ্যাফিলিয়েটের মাধ্যমে বা তার মতো করে

এক নজরে দেখুন মোবাইল অ্যাপ বনাম ওয়েব অ্যাপ – কোনটা বেছে নেবেন

আশা করছি আপনি আমাদের এই সম্পূর্ণ পোস্ট পড়েছেন এবং জানতে পেরেছেন মোবাইল অ্যাপ এবং ওয়েব অ্যাপের মধ্যে কোন কোন জিনিস রয়েছে এবং সেগুলো কি ধরণের কাজ করে। এখন হয়তো আপনি কিছু জিনিস মনে রেখেছেন এবং কিছু জিনিস ভুলে গেছেন।

কিংবা হতে পারে আপনি এমন কোনো জিনিস ছাড়া ফেলেছেন যা অ্যাপগুলো অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমি আপনাকে এক নজরে মোবাইল অ্যাপ বনাম ওয়েব অ্যাপ দেখার সুযোগ করে দিচ্ছি যেখানে গুরুত্বপূর্ণ জিনিসগুলো উল্লেখ করা থাকবে। তাহলে চলুন দেখে নেওয়া যাক এক নজরে মোবাইল অ্যাপ বনাম ওয়েব অ্যাপ এর গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

কাজের ধরণ মোবাইল অ্যাপ ওয়েব অ্যাপ
প্লাটপর্ম সাপোর্ট শুধুমাত্র দুইটিতেই সাপোর্ট হয়: Android ও IOS সকল প্লাটফর্মে সাপোর্ট হয়: Android ও শুধুমাত্র দুইটিতেই সাপোর্ট হয়: Android, MAC, PC, IOS ইত্যাদি
ইন্টলেশনের ক্ষেত্রে কোনো স্টোর থেকে ডাউনলোড করে ব্যবহার করতে হয়। শুধুমাত্র ব্রাউজারে গিয়ে সার্চ করলেই হয় ইনস্টলেশনের প্রয়োজন হয়না।
ইন্টারনেট সংযোগ কিছু এপস ডাউনলোড করে ব্যবহারের ক্ষেত্রে ইন্টারনেট প্রয়োজন হয়না কিছু ক্ষেত্রে প্রয়োজন হয়। ইন্টারনেট সংযোগের প্রয়োজন হয়।
পারফরমেন্স ও গতির ক্ষেত্রে মোবাইলের প্রসেসর, মেমোরি ও স্টোরেজ ব্যবহার করে তাই এগুলোতে জায়গা ফাকা থাকলে ভালো চলে। মোবাইলের প্রসেসর, মেমোরি ও স্টোরেজ প্রয়োজন হয়না শুধু ব্রাউজার এবং ইন্টারনেট সংযোগ থাকলেই চলে।
আপডেট ও রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে অ্যাপ স্টোর বা প্লেস্টোরে গিয়ে সেখান থেকে আপডেট করতে হয় ইউজারদের। আর মালিককে Android ও IOS উভয় জায়গাতে আপডেট করতে হয় ভিন্ন ভাবে যেন ইউজার ব্যবহার করতে পারে। মালিককে একভাবে এক জায়গাই আপডেট করলেই ইউজার সহজেই ব্যবহার করতে পারে। ইউজারদেরকে আলাদাভাবে আপডেট করতে হয় না।
ডেভেলপমেন্টের জন্য খরচ UI/UX, বাগ ফিক্সিং সহ অনেক কিছু করতে হয় যার খরচ মিনিমাম ১ লাখ থেকে শুরু হয় (ভালো মানের অ্যাপসের জন্য)। শুধুমাত্র ডোমেন ও হোস্টিং এ খরচ হয়। ভালো মানের অ্যাপসের জন্য ২০ হাজার থেকে ৫০ হাজারের মধ্যে হয়ে যায়।
ইউজার এক্সপেরিয়েন্সের ক্ষেত্রে মোবাইলের প্রসেসর, মেমোরি ও স্টোরেজে জায়গা বেশি থাকলে এক্সপেরিয়েন্স ভালো নাহলে ভালো না। মোবাইলের প্রসেসর, মেমোরি ও স্টোরেজ দরকার নেই শুধু মাত্র ব্রাউজার ও ইন্টারনেট সংযোগ হলেই চলবে।
ডাউনলোড ও স্টোরেজের ক্ষেত্রে ‌ইন্টারনাল স্টোরেজে জায়গা থাকতে হবে নাহলে ডাউনলোড করা যাবে না এবং ব্যবহারও করা যাবে না। মোবাইলে ইন্টারনের স্টোরেজের সেরকম কোনো দরকার নেই। ব্রাউজার ভালো হলেই চলে এবং এখানে আলাদাভাবে ডাউনলোডও করতে হয়না।
লঞ্চ ও মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে বিভিন্ন কাজ করার পর আলাদা আলাদা ভাবে Android ও IOS এ লঞ্চ করতে হয়। লঞ্চ করার পর মার্কেটিং অটোমেটিক হয় অর্থাৎ সহজ হয়ে যায়। লঞ্চ করা খুবই সহজ হয় এক ক্লিকেই লঞ্চ হয়ে যায় কিন্তু মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে আপনাকে একটু কষ্ট করতে হবে।
বাদ দিতে হবে বাদ দিতে হবে বাদ দিতে হবে

উপরের টেবিল থেকে আপনি এক নজরে মোবাইল অ্যাপ এবং ওয়েব অ্যাপের মধ্যে পার্থক্য সহজেই দেখতে পারবেন। আর আপনার জন্য বেছে নেওয়া সহজ হয়ে যাবে যে, কোন অ্যাপ আপনি বেছে নেবেন আপনার কাছে বা ডেভেলপমেন্টের কাজে।

সবশেষে আপনার জন্য কোনটি ভালো হবে | মোবাইল অ্যাপ বনাম ওয়েব অ্যাপ

আশা করছি আপনি সম্পূর্ণ পোস্ট মনোযোগ দিয়ে পড়েছেন এবং বুঝেছেন আজকের আলোচনা এবং অ্যাপ দুটির মধ্যে পার্থক্য। কিন্তু আপনি হয়তো বুঝতে পারছেন না কোনটা আপনি নির্বাচন করবেন আপনার কাজে।

আপনি যদি চান, আপনার কাজে আপনার বানানো অ্যাপ দ্রুত কাজ করবে এবং আপনি সেই কাজ মোবাইলে করেন তাহলে আপনি মোবাইল অ্যাপ পছন্দ করতে পারেন। সেক্ষেত্রে মনে রাখবেন আপনার মোবাইলে প্রসেসর, মেমোরি এবং স্টোরেজে পর্যাপ্ত পরিমাণ জায়গা আছে। আপনি যদি চান খুব সহজেই একটি অ্যাপের মাধ্যমে বেশি ইউজার নিয়ে এসে সেখান থেকে বিভিন্ন উপায়ে ইনকাম করবেন তাহলে আপনি মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করতে পারেন সেক্ষেত্রে খরচ একটু বেশি হবে।

আর আপনি যদি চান কম খরচে একটি ভালো অ্যাপ তৈরি করে সেখানে ইউজার বা ট্রাফিক নিয়ে এসে সেখান থেকে ইনকাম শুরু করতে তাহলে আপনি ওয়েব অ্যাপ তৈরি করতে পারেন। এখানে একটু পরিশ্রম করতে হয় কিন্তু এই পরিশ্রমের ফলে আপনি যেরকম একজন দক্ষ ব্যক্তিতে পরিণত হবেন সেরকম আপনি এখানে ইউজার বা ট্রাফিক বেশি পাবেন মোবাইল অ্যাপের থেকে। যার ফলে বলা যায়, আপনি এখান থেকে ইনকামও ভালো পাবেন তুলনামূলক।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ইউনিক আইটি ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। কেননা কমেন্ট চেক করা হয়।

comment url